ডঃ আখতার হামিদ খান একজন উন্নয়ন কর্মী এবং সমাজ বিজ্ঞানী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৫ জুলাই ১৯১৪ সালে ভারতের আগ্রায় জন্মগ্রহন করেন। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে অংশীদারিত্বমূলক পল্লী উন্নয়নের বিস্তার ঘটিয়েছেন। জনাব খান ১৯৮০ সালে ঔরাঙ্গী পাইলট প্রকল্প নামে তৃণমূল পর্যায়ে কমিউনিটি উন্নয়ন শুরু করেন যা পরবর্তীতে অংশীদারিত্ব উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনাপূর্ব হিসাবে বিবেচিত হয়। তাঁর বিশেষ অবদান ছিল পল্লী উন্নয়নে ১৯৫৯ সালে সম্বন্বিত প্রকল্প প্রতিষ্ঠা যা ‘কুমিল্লা মডেল’ হিসাবে সুপরিচিত। ‘কুমিল্লা মডেল’ এর একটি অন্যতম অঙ্গ ছিল দ্বি-স্তর সমবায় পদ্ধতি যা বর্তমানে বিআরডিবি কর্তক বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এছাড়াও তিনি পল্লী জনগোষ্ঠী ও শহরের বস্তিবাসীদের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করেন যা ক্ষুদ্র ঋণ থেকে আত্মকর্মসংস্থান এবং বাসস্থান থেকে পরিবার পরিকল্পনা পর্যন্ত পরিচালনা করা হয়েছিল। ডঃ আখতার হামিদ খানের বিভিন্ন পেশায় পদচারনা ছিল যেমন- তিনি কাজ করেছেন ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস এ আইসিএস অফিসার হিসাবে, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও কলেজে প্রভাষক হিসাবে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবেও তিনি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
আখতার হামিদ খান ১৯৫৯ সালের ২৭ মে কুমিল্লা জেলায় পাকিস্তান একাডেমি ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট (পার্ড) প্রতিষ্ঠা করেন। এবং এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসাবে নিয়োগ পান। ১৯৫৯ সলেই তিনি কুমিল্লা সমবায় পইলট প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। জনাব খান কুমিল্লা প্রকল্পে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত নিয়োজিত ছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পার্ড কে বাংলাদেশ একাডেমী ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট (বার্ড) নামে নামকরণ করা হয়।
আখতার হামিদ খানের নেতৃত্বের দক্ষতা শুধুমাত্র তাঁর কর্মকালীন সময়ে প্রেরণার উৎস ছিল না। বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ অন্যান্য অংশীদারিত্ব উন্নয়ন কর্মকান্ডেও প্রেরণার উৎস হিসাবে কাজ করছে। পল্লী উন্নয়নে তাঁর এই অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি র্যামন ম্যাগসেসে এওয়ার্ড, জিন্নাহ এওয়ার্ড, নিশান-ই- ইমতিয়াজ এবং সিতারা-ই- ইমতিয়াজ পুরস্কারসহ বিভিন্ন এওয়ার্ড পান। ড. আখতার হামিদ খান ০৯ অক্টোবর ১৯৯৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন।